বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:২২ অপরাহ্ন
লাইফস্টাইল ডেস্ক:: বায়ুদূষণ ও বৈশ্বিক মহামারী বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন রকম জটিল রোগ। বাতাসে ভাসমান বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়ার এবং ধূলিকণার আক্রমণে প্রথম আক্রান্ত হয় ফুসফুস। কারণ, নাক দিয়ে অক্সিজেন নেওয়ার সময় শ্বাস-প্রশ্বাসের মধ্যে দিয়ে যাবতীয় অশুদ্ধি সরাসরি ফুসফুসে পৌঁছে যায়। তার পর তা মিশে যায় রক্তের সঙ্গে। সেখান থেকেই নানা সংক্রমণ, অ্যাজ়মা, সিওপিডি-র মতো যাবতীয় রোগের শুরু হয়। এমনকি ফুসফুসের ক্যানসারও। তবে চিকিৎসকদের মতে, সাধারণ কিছু জিনিস প্রতিদিন করতে পারলে এই সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
নিয়ম মেনে খাওয়া-দাওয়া করার পাশাপাশি কয়েকটি বিশেষ খাবার খেলে ফুসফুসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। নিয়মিত কোন কোন খাবার খেয়ে ফুসফুসকে বাঁচাতে পারবেন এবং কিছু নিয়মকানুন জেনে নিন-
লেবু
লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং বিষাক্ত পদার্থ দূর করে। প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খালি পেটে পান করুন। চাইলে এতে খানিকটা মধুও যোগ করতে পারেন।
আদা
আদার মধ্যে উপস্থিত প্রদাহ-বিরোধী উপাদান ফুসফুসের প্রদাহ কমায়। এটি শ্লেষ্মা বের করে দিতে সাহায্য করে এবং শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিক রাখে। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে কাঁচা আদা খান। মধুর সঙ্গে খেলে এর প্রভাব বাড়বে।
হলুদ
হলুদে উপস্থিত কারকিউমিন ফুসফুসকে খুব ভালভাবে পরিষ্কার করে এবং সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট বৈশিষ্ট্য শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুধে হলুদ মিশিয়ে খেতে পারেন। এছাড়া হালকা গরম জলে হলুদ এবং লেবু মিশিয়ে একটি ডিটক্স পানীয় তৈরি করে খান।
রসুন
রসুন শ্লেষ্মা ভেঙে দেয়, ফুসফুস পরিষ্কার করে এবং ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে। এতে থাকা অ্যালিসিন প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। খালি পেটে এক বা দুটি কোয়া কাঁচা রসুন খান। এটি মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে বেশি উপকার পাবেন।
তুলসী
আয়ুর্বেদে তুলসীকে ফুসফুসের জন্য অমৃত বলা হয়েছে। এতে উপস্থিত ইউজেনল উপাদান সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং শ্বাসনালী পরিষ্কার রাখে। তুলসী পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন। এছাড়াও তুলসীর চা বানিয়ে খেলেও উপকার পাবেন। এছাড়াও মধুর সঙ্গে তুলসীর রস মিশিয়ে খান।
পানি পান করা
পানি পান করলে শরীরের অর্ধেক রোগই সেরে যায়। বুকে জমা সর্দি বা কফ পাতলা করতেও সাহায্য করে পানি। এ ছাড়াও শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ থেকে দূষিত পদার্থ বাইরে বের করার ক্ষেত্রে পানির ভূমিকা রয়েছে।
ধূমপান না করা
ফুসফুস সংক্রান্ত সমস্যা বেড়ে যাওয়ার জন্য দূষণ এবং ধূলিকণার দোষ যদি হয় ৬০ শতাংশ, তা হলে ৪০ শতাংশ দায় কিন্তু ধূমপানের। এই আবহাওয়ায় ফুসফুসের জটিল রোগ ‘সিওপিডি’ বেড়ে যাওয়ার জন্যও দায়ী সেই ধূমপান। তবে সিগারেট থেকে শুধু প্রত্যক্ষ ধূমপায়ীরা নন, আশপাশে পরোক্ষ ধূমপায়ীরাও কিন্তু আক্রান্ত হন।
ঘরের ভিতরের বাতাসের বিশুদ্ধ করা
বাইরে দূষণ চোখে দেখা গেলেও ঘরের মধ্যে থাকা সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম ধূলিকণাও কিন্তু আমাদের ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে। বিশেষ করে যে সব বাড়িতে পোষ্য থাকে, তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি। নিয়মিত ঘর পরিষ্কার রাখা, ভ্যাকিউম করার পাশাপাশি, এসি এবং ঘর পরিষ্কার যন্ত্র বা বাতাস পরিশোধন করার যন্ত্রগুলির দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন।
ঘরে গাছ রাখা
অন্দরসজ্জার জন্য অনেকেই বাড়িতে ছোট ছোট গাছ রাখেন। ঘরে গাছ রাখলে যে শুধু দেখতে ভাল লাগে, তা নয়। ঘরে বিশুদ্ধ অক্সিজেনও ছড়াতে সাহায্য করে। বাতাস পরিশোধন করতে পারে এমন যন্ত্র যদি না রাখতে চান, সে ক্ষেত্রে এই গাছগুলো রাখতে পারেন।